Haleem - The mandatory Ramadan Dish



 Haleem - The mandatory Ramadan Dish

Haleem from Manzilat's


করোনা, লকডাউনের জন্য রমজান, ঈদ এবছর কোথাথেকে যে চলে গেল বুঝতেই পারলাম না। রমজান মাস মানেই আমাদের কাছে কতগুলো শব্দ ভেসে আসে। প্রথমটা রোজা আর দ্বিতীয়টা ইফতার আর তৃতীয়টা হালিম।

Haleem from Manzilat's

রমজান আর হালিম ভারতবর্ষে যেন এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তবে কোথাও লেখা নেই হালিম রমজান ছাড়া খাওয়া যায় না, বা খেলে কোনো ক্ষতি হয়। যেমন নিহারীর ক্ষেত্রে আছে, গরমকালে নিহারী হজম করা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। হালিমে এইরকম কোনো ব্যাপার নেই। হালিম বস্তুটি ঠিক কি এবং কথা থেকে এটি এলো? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে হালিমের ইতিহাস নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে আমরা যা পেলাম -
আজকাল মাধ্যমিকে বাচ্চাদের ইতিহাসে ১০০ তে ১০০ পেতে দেখে বুঝি মানুষের ইতিহাসের প্রতি অনুরাগ অল্প হলেও বেড়েছে (দয়া করে বলবেন না এখন অল্প লিখলেও অনেক নম্বর পাওয়া যায় বা whatsappএ প্রশ্ন পেয়ে গেছিল এবার সবাই - সিলেবাস আবার কঠিন করে দিলে আপনার ছেলেপুলের কিন্তু ইতিহাসে পাতিহাস হবার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে), খাবারের ইতিহাসের প্রতি কতটা বেড়েছে সেটা লেখার পর আপনাদের কমেন্ট দেখে বুঝতে পারবো।
আসা যাক ভারতে হালিমের প্রচলনের কথায়। আমরা যে নবাব বাদশাহদের খাবারগুলো আজ খেয়ে থাকি তার সিংহভাগই এসেছে পারস্য থেকে মুঘলদের হাত ধরে বা কিছু রন্ধন প্রণালী এবং খাবার মুখলরা না আনলেও মুঘল আমলে সেসব জিনিস আরো বেশী করে খোলতাই হয়। হালিম আসে মধ্য প্রাচ্য থেকে, যেখানে একে হারিস বলা হয়। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী এই হারিস ভারতে ঢোকে পপুলার হয় হায়দ্রাবাদ হয়ে - নিজামদের হাত ধরে এবং নাম নেয় হালিম। Margaret Shaida-র লেখা অনুযায়ী ষষ্ঠ শতকে পারস্যের রাজা খুশরো সময় থেকে হালিম চলে আসছে। সপ্তম শতকে যখন মুসলমানরা পারস্য আক্রমন করল, তখন থেকেই এটা আরবের একটি জনপ্রিয় খাদ্য। হায়দ্রাবাদী খাদ্য বিশেষজ্ঞ প্রতিভা করন তার বই A Princely Legacy - Hyderabadi Cuisine and Biryani বইতে লেখেন - "In the late 7th century, Caliph Mu'awiya of Damascus, received a delegation of Arabian Yemenis. According to medieval historians who wrote about the encounter, the Caliph's first question to his visitors addressed something more urgent than political matters. Years earlier, on a journey to Arabia, he had eaten an exquisite dish, a porridge of meat and wheat. Did they know how to make it? They did." । দশম শতাব্দীতে Saif al-Dawlah Al-Hamdani এর লেখা বই Kitab al-Tabikh এ হালিমের রন্ধন প্রণালী পাওয়া যায়। তখন অবশ্য এর নাম ছিল হারিস বা হারিসা। তবে তুর্কি, ইরান, আজারবাইজান, উত্তর ইরাকে হারিসাকে কেসকেক বলা হয়। ষোড়শ শতকে আইন-ই-আকবরী তে কিন্তু হালিমের উল্লেখ আমরা পাই। তাই বলা ভালো, হালিমের ভারতে আগমন অনেক আগে হলেও সেটা জনপ্রিয় হয় হায়দ্রাবাদের নিজামদের বদান্যতায়।

Hyderabadi Style Haleem from Surfire the Coastal Cafe


সেই সূত্র ধরে একটু পেছনের দিকে গেলে আমাদের হাতে আসে একটা নাম, সুলতান সইফ নওয়াজ জং। এই সুলতান সইফ নওয়াজ জং ছিলেন Al-Qu’aiti বংশের hadhramaut ( পূর্ববতী ইয়েমেন) অঞ্চলের শাসক, যিনি 1930 সাল নাগাদ নিজামের দরবারে আসেন এবং দরবারের একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। উনিই মাঝে মাঝে হায়দ্রাবাদের নিজামদের হালিম রেঁধে খাওয়াতেন। উনি ওনার সাথে হালিমের রেসিপির সাথে নিয়ে এসেছিলেন ইয়েমেনের চৌষ সম্প্রদায়ের মানুষদের। এরা মূলতঃ অটোমান সাম্রাজ্যে মহল আর প্রাসাদে চৌকিদারীর কাজ করতো। এই চৌষদের ইয়েমেন থেকে নিয়ে আসা হয় হায়দ্রাবাদে সৈনিক এবং দেহরক্ষী হিসেবে সপ্তম নিজাম Nawab Sir Mir Osman Ali Khan Siddiqi, Asaf Jah VII GCSI GBE (6 April 1886 – 24 February 1967) সময়ে। এই চৌষরা থাকতো হায়দ্রাবাদের বারকাস অঞ্চলে। বারকাস শব্দটা ইংরেজি শব্দ Barracks থেকে এসেছে। এই সৈন্য এবং দেহরক্ষীদের জন্যই হায়দ্রাবাদ সহ সারা ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষ হালিমের স্বাদ নিতে পেরেছিল। এই চৌষদের সাথে যখন স্থানীয় মুসলমানদের বিয়ে হয় হালিম তখন দেশীয় ছোঁয়া পায়। হালিম হলো এমন এক হায়দ্রাবাদী খাবার যেখানে লাল লঙ্কা এবং তেঁতুল নেই। এটা আমরা সরাসরিভাবে ডেকান রন্ধন প্রণালীতে তেলেঙ্গানার প্রভাব বলতে পারি। আরবে কিন্তু হালিমকে মেন কোর্সের ভেতর রাখা হয়, সেখানে আমাদের এখানে হালিম কিন্তু স্টার্টার। বারকাস চত্বরে আপনি গেলে মিষ্টি হালিমও পাবেন।
আমাদের এখানে হালিমের দুরকম ভ্যারাইটি আছে। প্রথমটা গরম বার্লি আর নানারকম মশলা দিয়ে বানানো আর অপরটি তিন চার রকমের ডালের সাথে মাংস পেসাই করে পেস্ট বানানো হয়।
আমাদের দেশে রেস্তরাঁর খাবারের প্রচলন হাল আমলে হয়, তার আগে সবার বাড়িতেই রান্না হত। হালিমের ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয় নি। তবে বাজারে প্রথম সর্বসাধারণের জন্য হালিম আসে হায়দ্রাবাদের মদিনা হোটেলে 1953 সালে। দাম ছিল তখন তিন পয়সা। পরবর্তীকালে আরো কিছু ইরানী হোটেল যেমন city light, Garden, Shadab, Nayab, Paradise, Bahar and Hotel Grand হালিম বানানো শুরু করে। হালিমের সাংস্কৃতিক দিক এবং জনপ্রিয়তার জন্য 2010 সালে Geographical Indication status (GIS) পায় দেশের প্রথম নন ভেজ ডিস হিসেবে।
হায়দ্রাবাদের সব থেকে জনপ্রিয় হালিম প্রস্তুতকারক হলো পিস্তা হাউসের হালিম। 1997 সালে ছোট্ট এক বেকারি দিয়ে যাত্রা শুরু করে আজ হায়দ্রাবাদ ছাড়িয়ে মার্কিন মুলুকে এখন ছয়টা আউটলেট। বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন শহর থেকে শুরু করে বিদেশেও পিস্তা হাউসের হালিম পার্সেল হয়। 2017 সালে Bangkok এ অনুষ্ঠিত Thailand Food Exhibition 'THAIFEX 2017' এ European Union Intellectual Property Office এর আমন্ত্রণে তারা হালিম পরিবেশন করে আসেন সেখানে।
এবারে আসা যাক কলকাতার হালিমের কথায়। কলকাতার হালিম খেয়ে সেইভাবে মন কখনো ভরে না, ডালের মধ্যে জল মিশিয়ে পরিমান বাড়ায় খালি এখানে, স্বাদে বড্ড ফিকে লাগে। তাই ভালো হালিম খেতে হলে 24 রজনী সেন রোডের Surfiré The Coastal Café তে গিয়ে হায়দ্রাবাদি পিস্তা হাউস ঘরানার হালিম খেয়ে আসা যেতেই পারে। মানে হালিমে মাংস আর ডাল আলাদা করা যায় না, পুরোটা মিশে গিয়ে একটা পেস্ট তৈরি হয়। আর স্বাদে গন্ধে এক প্লেটের জায়গায় দু তিন প্লেট অনায়াসে শেষ করে দেওয়া যায়। ওনারা রমজান ছাড়াও শনি রবিবার করে হালিম বানান। ওনাদের facebook page টা follow করলে পেয়ে যাবেন কবে কবে বানাচ্ছেন ওনারা।

Haleem from Surfire the Coastal Cafe


Click here to visit the facebook page of Surfire the Coastal Cafe

রমজানের সময় সবদিনই ভালো হালিম পাওয়া যায় Manzilat's এ। কিন্তু এই বছর পুরো রমজানেই লকডাউন ছিল বলে এখন প্রায় রোজই হালিম বানানো হচ্ছে এখানে। বাংলার হালিম বলা চলে ওনার হালিমকে। তবে বাজার চলতি হালিমের থেকে অনেক ঘন। তাছাড়া মানজিলাত ফাতিমার নিজস্ব হাতের জাদু এবং মশলার কেরামতি তো আছেই। তাহলে আর দেরি কেন!!!

এবার রমজানে Aminia, Sanjha Chulha ও হালিম বানিয়ে home delivery এর ব্যবস্থা করলেও হালিম আনিয়ে খাওয়া সম্ভব হয় নি। তবে লকডাউন উঠলে একবার কলকাতার Statesman House এর সামনে ঠেলার হালিম খেয়ে আস্তে পারেন। সারাবছর বসে দোকানটা। লোকডাউনের আগে ৩০টাকা দাম ছিলাল, এখন কত হবে ধর্ণা নেই, তবে সস্তায় বেশ সুস্বাদু বলবো।

Comments

Post a Comment

Popular Posts