Layali Lubnan - The Night of Lebanon

     Layali Lubnan - এক অন্য আরব্য রজনী

মধ্যপ্রাচ্য বা Middle East এর খাবারের প্রতি আমার সবসময়ই একটা দুর্বলতা কাজ করে। আমরা মুঘলাই বা North Indian বলে আজ যেসব খাবার খাই তার প্রায় সিংভাগেরই উৎস হলো পারস্য বা মধ্য প্রাচ্য। এই মধ্যপ্রাচ্যের খাবার মূলতঃ মোঘল বাদশাদের হাত ধরেই আসে ভারতবর্ষের রসুইখানায় 1526 সালে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে জহিরউদ্দিন মহম্মদ বাবরের হাতে ইব্রাহিম লোদী পরাস্ত হয়ে। বাবরের কিন্তু প্রথম দিকে হিন্দুস্তানকে পছন্দ হয় নি,  জীবনপঞ্জিতে তিনি লিখে গেছেন, there is no ice, cold water, good food, good bread in the markets.” এবং “there is no grapes, quality fruits, mask melons, candles, hamams, torches”; ইত্যাদি ইত্যাদি। এই অতৃপ্তির জন্যই আজ আমাদের কাছে মোঘলাই খাবারের এত বৈচিত্র্য।  শুধু যুদ্ধ নয়, বিভিন্ন কূটনৈতিক সম্পর্কের মাধ্যমেও খাবারের স্থান বদল হয়েছে। এই যেমন, 1539 সালে শেরশাহ সুরি  দিল্লির মসনদ  করায়ত্ত করার পর হুমায়ুনকে জীবনের অনেকটা সময় নির্বাসনেই কাটাতে হয়।  সেই সময় তিনি ইরানের শাহের কাছ থেকে সাহায্য চাইতে গেলে, শাহকে  ভারতীয় রন্ধনশৈলীর উপরে লেখা একটি বই উপহার দেন।  আর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শাহ ভারতীয় রান্না, বিশেষত খিচড়ার অনুরাগী হয়ে পড়েন এবং শাহের আতিথিয়তায় ও পারস্যের রাজকন্যাকে বিবাহের সূত্রে হুমায়ুনও পারস্যের রান্নার অনুরাগী হয়ে পড়েন। 1555  সালে শের শাহের মৃত্যুর পর দিল্লির মসনদে হুমায়ুন যখন দ্বিতীয়বারের জন্য বসেন সেই সময় পারস্য থেকে বহু শিল্পীর সাথে বাবুর্চিরাও ভারতে আসেন এবং সাথে করে নিয়ে আসেন পোলাও, নানারকম কোফতা এবং  তন্দুরে পোড়ানো মাংসের রন্ধনশৈলী।

এখন তো বোম আর গুলির যুদ্ধ আর যুদ্ধের পর দেশ দখল করার রেওয়াজ তো চলে গেছে। এখন খাবারের স্থানান্তর হয় সবটাই কূটনৈতিক এবং ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিকে মাথায় রেখে। তারই সুফল হিসেবে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে না গিয়ে, কোনো মানুষের বলি না দিয়ে কলকাতায় বসে পেয়ে যাই লেবাননের মিষ্টি। ব্যাপারটা একটু খোলসা করে বলি - কলকাতার বেকবাগানে Shaikh's নামের এল রেস্তোরাঁ খোলে মাস কয়েক আগে, আর সেখানে খুব ভালো ভালো middle eastern খাবার পাওয়া যায়। shawarma, al habibi chap, al filfil kebab ইত্যাদি। সেখানেই আমি প্রথম খাই লেবাননের মিষ্টি Layali Lubnan। 

Layali Lubnan কে বলা হয় Lebanese Nights বা Nights of Lebanon, কারন সন্ধ্যের পর লেবাননের রাস্তায় খাবারের দোকানগুলো এই মিষ্টিটা বিক্রি করে। মিষ্টির স্বাদের আগে বলি এটা কি কি দিয়ে বানানো। লাইলি লুবনান এর তিনটে স্তর - একদম নীচের স্তর হয় সুজির। সুজি, দুধ, চিনি গোলাপ জল দিয়ে বেশ থকথকে করে বানানো হয়। তার ওপরে থাকে ক্রিমের আস্তরণ। অনেকে রেডিমেড কেকের ক্রিম ব্যবহার করে থাকেন, তবে ওনারা বেশ দুধ চিনি, ছানা দিয়ে এই ক্রিমটা বানান। স্বাদে নীচের স্তরের থেকে অনেকটাই বেশি মিষ্টি এই স্তরটা। স্থানীয় ভাষায় এই ক্রিমকে বলে আস্থা (astha)। Shaikh's এ এটাকে আস্থা হালুয়া নামেই পাওয়া যায়। এর উপরে ছড়ানো থেকে বাদামের গুঁড়ো, পেস্তা, আমন্ড বাদাম, গোলাপের পাপড়ি ইত্যাদি - এটাই হলো সবথেকে ওপরের স্তর। 
Address & Contact
Shaikhs
15A, Beck Bagan Row, Lower Range, 
Beck Bagan, 
Ballygunge, 
Kolkata, 
West Bengal 700017
Whatsapp: +91 99037 49749



Comments

Post a Comment

Popular Posts