Shantiniketan Food Trail


Shantiniketan Food Trail


সপ্তাহের কাজের চাপ শেষ করে বাঙালি যখন একটু শান্তির খোঁজ করে, মাথায় প্রথম নামটাই আসে শান্তিনিকেতন। শান্তিনিকেতনে গিয়ে সত্যিকারের শান্তি কজন পেয়েছে জানা নেই, তবে শান্তির বদলে ল্যাদ খেয়ে বাড়ি এসেছে। আমিও গেছিলাম ল্যাদ খেতেই। ল্যাদের সাথে খাবার যতটুকু খেতে পারলাম দুদিনে সেটারই ছোট করে একটা বিবরণ। এই বিবরণটা একটা ছোট্ট ভিডিওর মাধ্যমে যতটা সম্ভব তুলে রাখতে চেষ্টা করেছি, চাইলে একবার Youtube এ গিয়ে ভিডিওটা দেখে আসতে পারেন, লিঙ্ক দেওয়া রইলো।



◆Nola Food Boutique: বোলপুর স্টেশনের খুব কাছেই 205 রামকৃষ্ণ রোডে আছে Nola Food Boutique. স্টেশন থেকে টোটো ধরলে দশ মিনিটে পৌঁছে দেবে।
শান্তিনিকেতনে সাধারণত বাঙালিরা গিয়ে ঘরোয়া খাবার দাবারই পেয়ে থাকেন। কিন্তু এমন যদি কখনো হয়, আপনার শান্তিনিকেতনে গিয়ে pizza, pasta বা continental খেতে ইচ্ছে করছে, তখন কি করবেন??? উত্তরটা সহজ - google link ধরে Nolaতে পৌঁছে গিয়ে আপনার নোলার বাড় বাড়ন্তটা একটু কমিয়ে আনতে পারেন। NOLA একটি Multi cuisine Food Boutique যেখানে আপনি খাঁটি বাঙালিদের জন্য পারশে, পমফ্রেট, ভেটকি, মৌরোলা মাছ থেকে শুরু করে এক্সপেরিমেন্টাল বাঙালিদের জন্য ইতালিয়ান, ফ্রেঞ্চ, পর্তুগীজ, রাশিয়ান এবং কন্টিনেন্টাল খাবারদাবার পাবেন।

Lemon Chicken
পুরো শান্তিনিকেতন জুড়ে খাবার দাবার নিয়ে একটা চল আছে। আপনাকে ভালো খাবার খেতে হলে আগের দিন জানিয়ে রাখতে হবে রেঁস্তোরাতে আপনি পরের দিন কি খাবেন। এটা বেশ চাপের বিষয় আমার মত খাবার পাগল মানুষের জন্য। কখন কোন খাবারের প্রতি আমার প্রেম জাগবে এটা আমি আগে থেকে বলতে পারি না। তাই আমার মত মানুষ যারা শান্তিনিকেতন যায় তাদের জন্য Nola আইডিয়াল চয়েস। দুপুরে লাঞ্চের মাছের ক্ষেত্রে বলতে পারি বাজারে যে সময় যেমন মাছ ওঠে তার ওপর বেশ খানিকটা নির্ভর করে। তবে কন্টিনেন্টাল খাবারগুলো মোটামুটি সব সময়ই পাওয়া যায়। NOLA তে এসে হাত পা ছড়িয়ে আরাম করার সাথে সাথে এর আরো একটি বিশেষত্ব হলো এখানে মাঝে মাঝে Short Films এর Premiere থেকে শুরু করে Talk Show, গান বাজনারও আয়োজন হয়ে থাকে মাঝে মাঝে। ভাগ্য ভালো থাকলে আপনি যদি সেই সময়ে সেখানে উপস্থিত থাকেন তাহলে আরো এক নতুন অভিজ্ঞতা হতে পারে আপনার, যেটা সচরাচর শান্তিনিকেতন ঘুরতে এসে লোকের হয় না। NOLA FOOD BOUTIQUE এর যাত্রাটা শুরু হয়েছিল Home Delivery সার্ভিস দিয়ে ছয় মাস আগে। বর্তমানে food boutique চালছে 15th June থেকে, পাশাপাশি তারা এখনো home delivery সার্ভিসটা দিয়ে আসছে। সপ্তাহের শেষে আপনি যদি খুব ক্লান্ত থাকেন যেখানে  আপনি হোটেলের বিছানা থেকে উঠে খেতে আসতে পারবেন না বা চাইছেন না এবং তার সাথে আপনার অন্যরকম কিছু খাবার চাখতে ইচ্ছে করছে,  তার জন্য টুক করে এই 86973876766290404797 নম্বরগুলোতে ফোন করে দিলেই খাবার চলে যাবে আপনার হোটেলে। Google Play store এ Nola র একটি appও আছে যেখান থেকে খাবার অর্ডার করতে পারেন। এবারে যদি খাবারের পরিবেশ নিয়ে বলতে হয়, তাহলে বলবো, গতানুগতিক রেঁস্তোরার মত এটি নয়, লোকজন এখানে এসে খড়ের চালের নীচে কাঠের চেয়ারগুলোতে গা এলিয়ে আরাম করে বসে যাতে খাবারটা উপভোগ করতে পারেন তার সুবন্দোবস্ত ওনারা করেছেন। সাথে একটা ছোট্ট লাইব্রেরি করার পরিকল্পনা চলছে ওনাদের, যেখানে বোলপুরের ইতিহাস থেকে শুরু করে ঘুরে বেড়ানো, wild life সবরকম বইয়েরই সম্ভার রাখার কাজ চলছে।


Chicken Stroganoff
এবারে আসা যাক খাবার ব্যাপারে। Nola র খাবার নিয়ে কথা বলার আগে খাবারের presentation নিয়ে কথা বলতে হয়। ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি "ঘ্রানেন অর্ধভোজনম" নামক একটা কথা। ভালো খাবার দেখার পর কতটা ভোজন হয় জানি না, কিন্তু খিদেটা চড়চড় করে বাড়তে থাকে। Nola র খাবার গুলো এরকমই, দেখলেই চড়চড় করে খিদে বাড়ে। স্পেশালি কন্টিনেন্টাল ডিসগুলো। রাতে খেতে গেছিলাম বলে মাছ আর চেখে দেখা হয়নি। তবে শান্তিনিকেতনে pizza, pasta, Stroganoff পাবো এই ভাবনাটা আমার মাথাতেও আসেনি। প্রথমবার শান্তিনিকেতনে পা রেখে খুব খারাপ অভিজ্ঞতা হয় নি।

Phone Number: 8697387676 / 6290404797


◆Aarhani : এক দম্পতি, যারা বিশ্বাস করেন নিজে হাতে যত্ন সহকারে রান্না করে এবং লোকজনকে খাওয়ালে তীর্থে যাবার থেকে বেশি পুণ্য লাভ হয়। দিব্যাংশু বর্গী ওরফে বর্গীদা, চিত্রশিল্পী এবং রিনি বর্গী, প্রাক্তন AIR INDIA কর্মী শান্তিনিকেতনে শ্যামবাটি থেকে গোয়ালপাড়া যাবার পথে এক জায়গায় একটা ছোট্ট দোতলা বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন আর শান্তির খোঁজে আসা পর্যটকদের পেটে শান্তি দেবার মধ্যে দিয়ে মনে শান্তি দিয়ে থাকেন। খাবারের দুটো জায়গা আছে। খড়ের চাল মাটির দেওয়াল দেওয়া একটা কুঁড়ে ঘর, যা আজকাল দেখায় যায় না। সেখানে একটা বিশাল বড় গোল টেবিল আছে। সেই টেবিলে খাবার খেয়ে শান্তির খোঁজ করা যেতেই পারে। অথবা আপনি বাইরে বসতে পারেন, চারকোনা লম্বা টেবিল, একসাথে আরামসে দশজন বসতেই পারে।









Google map এ location দেওয়া রইলো, তবে শান্তিনিকেতনে গিয়ে মোবাইলে ইন্টারনেট খুব আসতে চলে বলে phone number টাও দিয়ে রাখলাম, চিনতে না পারলে একবার ফোন করে নেবেন।

Aarhani
Shantiniketan, ShonajhuriPally ,   West Bengal 731204
98366 11383
9836483487


Pork 
শান্তিনিকেতনে এসে কেউ যদি pork beef খোঁজ করেন তাহলে আপনাকে আসতে হবে আরহনীতে। pork আর beef এর supply এখানে না থাকার জন্য ওনারা কলকাতা থেকে সব নিয়ে আসেন। এখানে এসে pork আর beef খেতে হলে একটু আগে থেকে ওনাদের জানালে ওনারা সেই মতো ব্যবস্থা করতে পারেন।  লোকের একটা ভ্রান্ত ধারণাও আছে, অনেকে মনে করেন এখানে খালি pork, beef ই পাওয়া যায়, কিন্তু সেটা সত্যি নয়। আমি এখানে Pork এর যে item টা খাই সেটা বেশ খানিকটা Naga Pork এর ধাঁচে রান্না করা ছিল । আর Beef এর কথা যদি বলতে হয় তাহলে বলবো এখানকার Beef টা বেশ শুকনো ছিল, খেতে Beef Dopiyaja র মতো লেগেছে আমার। এছাড়া যদি স্বাদের কথা বলেন তাহলে বলবো, আমার খেতে বেশ লেগেছে, এখন মানুষ ভেদে তার স্বাদেরও পার্থক্য হয়, একবার গিয়ে চেখে আসুন না, দেখুনই না আপনার কেমন লাগে ওখানকার Pork আর Beef । এখানকার কাশ্মীরি মটনটা একটু চেখে দেখতে পারেন। গোটা গোটা গোলমরিচ দিয়ে রান্না, খেতে অনেকটা কাশ্মীরি গোস্তবার মতো। এখানে Pork, Beef, Mutton  একসাথে থাকলেও নিরামিষ খাবার গুলো এত ভালো ছিল যে দল, ভাত, আলুভাজা, আলুপোস্ত খেয়েই পিটার অর্ধেকের বেশি ভোরে যায় । 



Beef 
Kashmiri Mutton 









নিরামিষ খাবারগুলোও এখানে অসাধারন, ভেজথালির দাম ওই 120/ 140 মতো। এই দামটা সারা শান্তিনিকেতনে মোটামুটি একই রকম থাকে ভেজ থালির ক্ষেত্রে। বাসমতী চালের ভাত, ডালের সাথে চৌকো করে আলু পোস্ত ভাজা - ব্যস এইটুকু যদি হয়, মিলিয়ে নেবেন, আপনি nonveg ছেড়ে veg খাবেন। মোটামুটি মটন বা চিকেন নিয়ে মাথাপিছু 350/ 400 টাকায় এই hidden gem এ একটা lifetime experiance হয়ে যাবে।



Mitali Homestay
◆Mitali Homestay : বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস থেকে এক / দেড় কিলোমিটারের মধ্যে পঞ্চাশোর্ধ এই সাদা বাড়ির ইতিহাস বেশ রঙিন। খাবার এবং ইতিহাস দুটোই আমার সমান পছন্দের। মাধ্যমিকে ভুল বশতঃ বেশি নাম্বার পাওয়ায় ইতিহাস নিয়ে পড়তে দেওয়া হয়নি বাড়িতে আর উচ্চমাধ্যমিক দেবার পর বলা হলো computer science নিয়ে পড়তে, টকি আর hotel management পড়া হলো না। তাই ইতিহাস এবং খাবার নিয়ে ইতিহাস যেখানেই পাই লোভ সামলাতে না পেরে ছুটে যাই।
তাহলে শুরু করার যাক, ঢাকা নিবাসী eye surgeon ডাক্তার দ্বিজেন্দ্রনাথ মিত্র ব্রাহ্ম হবার সুবাদে ঠাকুরবাড়ির সাথে তার সখ্যতা ছিল অনেকখানি। ওনার সাথে গুরুদেবের বন্ধুত্বও ছিল বেশ গভীর। ব্রিটিশ কবি Wiliiam Rothenstein এর আমন্ত্রণে যখন প্রথমবারের জন্য গুরুদেব ব্রিটেন ও আমেরিকা যাত্রা করলেন, তখন তার সফরসঙ্গী ছিলেন এই দ্বিজেন্দ্রনাথ মহাশয়। এবারে আরেকজনের কথা বলি, সিলেট নিবাসী বন্দেমাতরম এর প্রকাশক মহান বিপ্লবী বিপিন চন্দ্র পাল। এই বিপিন চন্দ্র পালের মেয়ের ঘরের নাতি হলেন সুশীল দে, আর একটু আগে যে ডঃ দ্বিজেন্দ্রনাথ মিত্রের কথা বললাম, ওনার মেয়ে ইন্দিরা (বুলবুল) দেবীর সাথে দেখা হয় কলকাতার এক গানের স্কুলে 1916 সালে। তখন সুশীল বাবু নয় আর ইন্দিরা দেবী মাত্র চার। প্রেসিডেন্সি কলেজের অর্থনীতিতে স্বর্ণপদক প্রাপ্ত সুশীল বাবু  1929 সালে I.C.S. (Indian Civil Service, the apex body of the colonial administration)  পরীক্ষা পাশ করে 1930 সালে বিয়ে করেন ইন্দিরা দেবীকে। বিয়ের পর তাদের দুই সন্তান হয়, শান্তনু এবং পার্থ। এর মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে সুশীলবাবু এসে থাকা শুরু করলেন 3A থিয়েটার রোডের বাড়িতে। সেখানে জন্ম নেয় অনুরাধা এবং কৃষ্ণ। দেশ স্বাধীন হবার পর সুশীল বাবু ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধানচন্দ্র রায়ের আমলা। 1955 সালে তিনি মনঃস্থির কবলেন অবসর নেবার এবং United Nation এর Director পদে যোগ দেবার আমন্ত্রণে সারা দিলেন এবং চলে গেলেন New York। 1957 সালে সেখান থেকে চলে এলেন রোম। 1960 সাল, সুশীল বাবু এখনও থিতু হবেন না বলে ঠিক করেছেন, কিন্তু ইন্দিরা দেবী চাইছিলেন এই পরিযায়ী পাখীর মত ঘুরে বেড়ানোর জীবন থেকে মুক্তি নিয়ে এক জায়গায় বসে একটু শান্ত হবার। শুরু হলো জায়গার খোঁজ। ঘুরতে ঘুরতে তারা কবিগুরুর শান্তিনিকেতনের কাছেই বোলপুরের ফুলডাঙ্গার কাছে একটুকরো উঁচু জমি পান, যার চারপাশে কিছুই নেই। প্রায় দুই কিলোমিটার দূর থেকে আলো এবং টেলিফোনের তার নিয়ে এসে 1969 সালে এই মিতালি পুরোপুরি তৈরি হয়। 15 ইঞ্চির দেওয়ালের গাঁথনী, 13 ফুট উঁচু সিলিংয়ের  Moroccan Architecture থেকে অনুপ্রাণিত এই বাড়ির plan ইন্দিরা দেবী রোমে বসে  বানিয়েছিলেন।



 1969-এ সুশীল বাবু United Nation থেকে অবসর নেন আর এই বছরই ওনার ছোট ছেলে কৃষ্ণ United Nation এ যোগ দেন। সুশীল বাবু মাত্র দু বছর-ই মিতালিতে থাকেন। 1971 সালে ওনার দেহাবসানের পর ইন্দিরা দেবী 21 বছর মিতালিকে সামলে 1990 এ উনি পরলোক গমন করেন। দীর্ঘ 26 বছর বিভিন্ন দেশে কাজ করার পর 1995 সালে বাড়ির ছোট ছেলে কৃষ্ণ শান্তিনিকেতনে ফিরে আসেন স্ত্রী চন্দনা এবং পুত্র গৌতম ও কন্যা নন্দিনীকে নিয়ে। এরপর 11বছর চন্দনাদেবী মিতালিকে সামলেছেন। 2008এ ওনাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয় এবং 2011 সালে মিতালি বসত বাড়ি থেকে homestay তে পরিবর্তিত হয়। 2013 সালে কৃষ্ণবাবু পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সুকন্যাদেবীর সাথে। বর্তমানে সুকন্যাদেবীই এখন মিতালিকে সুন্দর করে সামলে চলেছেন।
মিতালিতে গেলে থাকার জন্য ওনাদের কিভাবে contact করতে হবে তার জন্য মিতালির website দিয়ে রাখলাম।

Roasted Mutton
ইতিহাস হয়ে গেছে, এবারে আসা যাক খাবারের কথায়। এখানে আমি সকালের breakfast আর রাতের dinnerটাই করি। breakfast এ সুকন্যা দি আমাকে লুচি, বেগুনভাজা, আলুর তরকারীর সাথে তালের ক্ষীরের পাটিসাপটা খাইয়েছিলেন। আমার শান্তিনিকেতন ভ্রমণের যদি সেরা কোনো মুহূর্ত থাকে তবে সেটা হলো এই তালের ক্ষীরের পাটিসাপটা খাওয়া। Breakfast বাঙালি খাবার দিয়ে হলেও রাতের dinner ছিল Continental। স্যুপ, পাস্তার সাথে ছিল মটন রোস্ট, চিকেন আর আম্রপালি আমের icecream। এই আমের icecreamই বলুন আর  তালের ক্ষীরের পাটিসাপটা বলুন সবই কিন্তু মিতালির গাছের। এত আম, কাঁঠাল, তাল হয় যে খেয়ে শেষ করতে পারেন না ওনারা। তাই কেউ ঘুরতে গেলেই এই সব অসামান্য খাবারগুলো কিন্তু তারা পেয়ে যায়।
Mango Icecream



White Sauce Chicken










Pasta

Luchi & Begun Bhaja
Aloor Torkari









Taal er Kheer er Patishapta
সবশেষে খাবারের দামের কথায় আসি, dinner এ আমার ওই 600টাকার মত পড়ল, আর সকালের breakfast টা তো, সুকন্যাদি বললেন, " এ মা, এটা কেন দেবে তুমি, আমি তো তোমাকে খাওয়াবো বলে ডেকেছি"। মিতালি, মানে বন্ধু - মনে অচেনা কোনো মানুষকে ভালোবেসে কাছে টেনে আপন করে নেওয়া। মিতালিতে গিয়ে, খেয়ে যে অভিজ্ঞতা হলো সেখান থেকে কেউ যদি মিতালি হোমস্টের নামের বিচার করতে বলে তাহলে খুব সহজেই আমি এখানে দশে দশ পেতে পারি।
সব শেষে মিতালিতে যাবার জন্য google location আর phone number -

Mitali Homestays, Shantiniketan
Phuldanga, Bolpur, off Taltore Rd, Santiniketan, West Bengal 731235
094338 98067

Vanalaxmi Thali
◆ Vanalaxmi : শান্তিনিকেতনে এসে বনলক্ষীতে খায় নি এরকম মানুষ খুব কম আছে। কালীঘাটে গিয়ে কালীপুজো দিয়ে প্যারা সন্দেশ না খেয়ে বাড়ি আসা আর শান্তিনিকেতনে গিয়ে বনলক্ষীতে না খেয়ে আসা একই ব্যাপার। শান্তিনিকেতন থেকে 13/ 14 কিলোমিটার দূরে ইলামবাজার যাবার পথে চৌপাহারি জঙ্গলের কাছে এই বনলক্ষী উন্মেষ সমিতি। বনলক্ষীর উদ্ভবের গল্পটাও একটু বলি -
বাংলাদেশের পুষ্টিয়া এবং ময়মনসিংহের রাজপরিবারের ছেলে প্রয়াত নিরঞ্জন সান্যাল 1963 সালে এই জায়গায় কাজ শুরু করে 1964 সাল থেকে তার মানসকন্যা বনলক্ষীর জন্ম দেন। বনলক্ষীর বিশেষত্ব হলো, আপনি বনলক্ষীতে ভাত থেকে শুরু করে সবজি, মাছ (অবশ্যই ইলিশ মাছ বাদে), মুরগি যা কিছুই খাবেন সবই এখানে চাষ করা হয়ে থাকে। এখানে খাবারের সাথে সাথে থাকার ব্যবস্থা, নার্সারী, হাতের কাজের জন্য বুটিক, বড়ি, ঘি ইত্যাদি আছে। আপনি চাইলেই এখন থেকে কলম করা চারাগাছ থেকে শুরু করে Jwellerys, Bags, Showpiece, শাড়ি, বড়ি, ঘী সমস্ত কিছুই বাড়ির জন্য নিয়ে আস্তে পারেন। বনলক্ষীর খাবার নিয়ে যদি বলতে হয় তাহলে বলতে হয়, বাড়িতে মায়ের হাতের রান্নার মতো ভালো। আমি এখানে বেশ কিছু নতুন জিনিস ও পেলাম, তার মধ্যে আলাদা করে শিউলি পাতার বড়ার কথা আলাদা করে বলতেই হয়। আগেই বলেছি শান্তিনিকেতনে খেতে হলে একদিন আগে বলতে হয়, আর বলার জন্য যে নাম্বারে ফোন করতে হবে সেই নাম্বার আর google location টাও দিয়ে দিলাম এখানে-
Vanalakshmi Unmesh Samiti
Birbhum District, Chaupahari Jangal, West Bengal 731236
099327 77229


Nursery
ভেজ থালির দাম এখানে 120টাকা । ভেজ ছাড়া এখানে চিংড়ি, ইলিশ, মটনও খাই। আদ্যপান্ত বাঙাল হওয়া সত্ত্বেও আমার কিন্তু বনলক্ষীর সর্ষে ইলিশের থেকে চিংড়ি মাছের মালাইকারি বেশি ভালো লেগেছে। এখানেও তাই, তবে এখানে সোমবার সবকিছু বন্ধ থাকে। বনলক্ষীতে খেয়ে বাড়ির জন্য ঘি, বড়ি নিয়ে আস্তে পারেন, কলকাতায় এই কোয়ালিটির বড়ি বা ঘি ঐ দামে খুব একটা পাওয়া যায় না।
Chingri Macher Malaicurry & Sorshe Illish
Cold Coffee from Kasahara Cafe
◆Kasahara Cafe : শান্তিনিকেতন এসে যখন আপনি বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস ঘুরতে আসবেন, এত বড় ক্যাম্পাস ঘুরতে ঘুরতে আপনার ক্ষিদে আর তেষ্টা পাবেই। তখন কিন্তু এই Kasahara Cafe আপনার কাছে মরুভূমিতে নোরা ফাতেহির মতো উদয় হবে। Mr. Kimtaro Kasahara, একজন
জাপানি শিল্পী শান্তিনিকেতন আর শ্রীনিকেতনের উন্নতির জন্য প্রচুর কাজ করেন। ওনাকে এবং ওনার কাজকে সবার মাঝে তুলে ধরার জন্যই এই ক্যাফের নাম Kasahara Cafe। এখানে ভেজ ননভেজ ইন্ডিয়ান , চাইনিজ, বাঙালি খাবার পাওয়া গেলেও, ওই কলেজে ক্লাসের ফাঁকে এসে একটু চা, কফি, ওমলেট খাবার আদর্শ জায়গা। তবে একটু বলে রাখি, এখানে আগে টাকা দিয়ে আপনাকে কমপক্ষে আধা ঘন্টা বসতে হতে পারে, বেশিপক্ষে আমি 1ঘন্টা বসে মাশরুম ওমলেট পেয়েছি। তবে, এখানে হোম ডেলিভারীর সুবিধাও আছে এখানে। ওনাদের website এর link নীচে দিলাম -
Click here to visit Kasahara Website
এখানে ওনাদের পুরো মেনুটা আছে, আপনি মেনু দেখে যখন খুশি অর্ডার দিতেই পারেন, সন্ধ্যেবেলা এবং রাতের বেলাতেও ওনারা অর্ডার নিয়ে থাকেন।
Google location আর phone number ও দিয়ে রাখলাম -
Kasahara - The Cafe
Shantiniketan, Sripalli, West Bengal 731235
095932 77178


Ram Shyam Resort : শান্তিনিকেতন এসে বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস ঘোরাটা যতটা important ঠিক ততটাই important  সোনাঝুড়ির হাটে কেনাকাটা করা। ধরুন আপনি যদি অস্বাভাবিক রকম কেনাকাটার প্রতি আসক্ত, যদি dress, accessories দেখলেই আপনার মনে হয় টাকা কম পড়লে কিডনি বিক্রি করে হলেও আমি কেনাকাটা করবই তাহলে আপনি একদম সকাল থেকেই সোনাঝুড়ির হাটে ঘোরাঘুরি করবেন। এই অবস্থায় আপনার যখন ক্ষিদে পাবে, lunch করার আদর্শ জায়গা, হাটের একদম পাশেই রাম শ্যাম রিসোর্ট। phone number আর google location দিয়ে তারপর খাবার কথায় আসি।
Ram Shyam Village Resort
Sonajhuri, Bolpur - Santiniketan Rd, West Bengal 731235
083718 28780



কাঁসার থালায় সুন্দর করে পরিবেশন করা ভেজ থালি, দাম 130টাকা। এর সাথে ওদের দেশী মুরগীটা অবশ্যই খাওয়া উচিত। কেনাকাটা করলে মন ভালো হয় ঠিকই, কিন্তু এই দেশী মুরগী আর তার ঝোল এই ভালো মনে এক স্বর্গীয় অনুভূতি এনে দেবে। এখানে কিন্তু আপনাকে আগে থেকে ফোন করার দরকার পড়বে না। খাবারের গুনগত মান খুব ভালো, তবে আরহনীতে যে খাবার খেয়েছি তার ধারে কাছে বাঙালি খাবারের রেঁস্তোরা এই মুহূর্তে শান্তিনিকেতনে নেই। যদি রিসোর্টে থাকার কথা বলেন, তাহলে বলবো, জায়গাটি বেশ ভালো। সুন্দর mud house এ থাকার বন্দোবস্ত আছে। দামও সাধ্যের মধ্যে।

যদি কখনো এই লেখা পড়ে শান্তিনিকেতন ঘুরে আসেন, তাহলে আপনার অভিজ্ঞতা জানাবেন। অপেক্ষায় রইলাম।

Comments

Popular Posts